জ্ঞানের প্রাথমিক উদ্দেশ্য হল- দক্ষতা অর্জন। অর্জিত দক্ষতার আলোকে নিজের কর্তব্য-কাজকে ত্রুটিমুক্তভাবে সম্পাদন করা। জ্ঞানের এই প্রাথমিক উদ্দেশ্য কেবল মানুষের পার্থিব, বৈষয়িক ও জৈবিক প্রয়োজন মেটায়। কিন্তু এর মাধ্যমে মানুষের আধ্যাত্মিক ও নৈতিক উন্নয়ন সাধিত হয় না। এবং এটি হল জ্ঞানের সেই স্তর যার মাধ্যমে মানুষ এর নিম্নতর উপকারটি লাভ করে থাকে।

জ্ঞানের উচ্চতর উদ্দেশ্য হল- সত্যের সন্ধান লাভ করা। সত্যের সন্ধান বা সঠিক পথের দিশা পেতে হলে উচ্চতর জ্ঞানের কোন বিকল্প নাই। শুধুমাত্র এর মাধ্যমেই সঠিক মত ও পথের সন্ধান লাভ করা যেতে পারে এবং এটিই হল একমাত্র প্রাকৃতিক এবং চিরশাশ্বত ইলাহী বিধান। এজন্য রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন সত্যের সন্ধানে হেরা গুহার নির্জনতাকে বেছে নেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তখন ‘পড়’ বলে তাঁকে সেখান থেকে বিদায় জানান। রাসূলুল্লাহ (সা.) এরপর দ্বিতীয়বারের জন্য আর হেরা গুহায় ধ্যানে নিমগ্ন হননি। তাই জ্ঞানের এই পথকে (পড়ালেখার) নবী-রাসূলদের পথ বলে আখ্যা দেয়া হয়েছে। কাজেই যারা সত্যের সন্ধানে পড়ালেখা করে শুধুমাত্র তারা নবী-রাসূলদের উত্তরসূরি (ورثة الانبياء)।

জ্ঞানের প্রাথমিক উদ্দেশ্য সফল হতে খুব বেশী কষ্ট বা ত্যাগ স্বীকার করা লাগে না। প্রচলিত পাঠক্রম বা স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিয়ে পাশ করলেই জ্ঞানার্জনের প্রাথমিক উদ্দেশ্য সফল হয়ে যায়। কিন্তু সত্য পথের সন্ধান পেতে হলে পর্যায়ক্রমিক উচ্চতর চেষ্টা-প্রচেষ্টা চালাতে হয়। যে চেষ্টা-প্রচেষ্টার মধ্যে রয়েছে কিছু অতীব গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। যেমন- দৃঢ় সংকল্প নিয়ে অনুসন্ধান চালানো, নিজের সামর্থের সবটুকুন উজাড় করে দেয়া, বিচক্ষণতার সাথে অধ্যয়ন করা, অর্জিত জ্ঞানকে নিজের মাঝে ধারণ করা এবং নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জ্ঞানার্জন করা। যে কোন বিষয়ে সঠিক মত ও পথের সন্ধান লাভের এছাড়া কোন বিকল্প পথ আমাদের জানা নাই।
Spread the love